দলের গুম হওয়া নেতা-কর্মীদের খুঁজে বের করতে জাতিসংঘের অধীনে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিশ্ব গুম দিবস উপলক্ষে রবিবার গুলশানে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের গুম হওয়া নেতা-কর্মীদের স্বজনদের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশকালে তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় গুম হওয়া নেতা-কর্মীদের স্বজনরা খালেদা জিয়াকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় সেখানে এক শোকাবহ পরিবেশের সৃস্টি হলে খালেদা জিয়া বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এ সময় খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দিবস পালন হয়। কিন্তু আমি জানতে চাই, কেন এই অবৈধ সরকার আজ আন্তর্জাতিক গুম দিবস পালন করল না? কারণ, তারা এ সব গুমের সঙ্গে জড়িত। সরকারের আদেশ-নির্দেশ ছাড়া কেউ এটা করতে পারে না।’ খালেদা জিয়া বলেন, ‘একদিন না একদিন এ সবের বিচার হবেই হবে। যারা অন্যায় করেছে, অপরাধ করেছে, তাদের প্রত্যেকের শাস্তি হবে, হবেই।’ গুমের শিকার স্বজনদের মধ্যে বিএনপির নিখোঁজ সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহমিনা রুশদির লুনা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর প্রত্যক্ষদর্শীদের ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। জিডি করলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী কাছে গিয়েছিলাম কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।’ বিমানবন্দর থানা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন মুন্নার বাবা মো. শামসুদ্দিন বলেন, ‘আমার সামনে থেকে মুন্না ও আরেকটি ছেলে তরিকুল ইসলাম জন্টুকে ধরে নিয়ে গেছে। তখন জিজ্ঞাসা করেছিলাম—আপনারা কারা? পুলিশ বলেছিল—আপনার ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। ছেলেকে না পেয়ে যখন মামলা করতে গিয়েছিলাম, তখন বলা হলো—সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয় না।’ তেজগাঁওয়ের নাখালপাড়া যুবদলের সভাপতি সাজিদুল ইসলাম সুমনের বড় বোন মারুফা ইসলাম বলেন, ‘সুমন ও তার ৬ বন্ধুকে র্যাব মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে প্রায় দুই বছর ধরে আমার ভাইয়ের কোনো খবর পাচ্ছি না। প্রশাসনের প্রতিটি দরজায় গিয়েছি। কিন্তু কেউ বলেনি কোথায় আছে আমার ভাই।’
Discussion about this post