অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনের আওয়ামী লীগের প্যানেল পরিচিতি সভা। সভায় বার কাউন্সিলের বিভিন্ন পদে প্রার্থীদের জয়ী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পক্ষের সকল আইনজীবী মিলে-মিশে নির্বাচনে কাজ করলে জয় সুনিশ্চিত।
বুধবার বিকেলে ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান অডিটরিয়ামে এই সভা হয়। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সভার আয়োজন করে।
সভায় বক্তারা বলেন, এবারের নির্বাচনে যোগ্য ব্যক্তিদের ভোট দিয়ে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের উন্নয়ন এবং অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করবে সাধারণ আইনজীবী সমাজ। তাই দলমত নির্বিশেষে সকল আইনজীবীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
সভায় বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বারের) সাবেক সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন সভাপতিত্ব করেন। এতে বক্তব্য দেন সিনিয়র আইনজীবী বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, সিনিয়র আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান, ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মোখলেসুর রহমান বাদল, অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, আব্দুল্লাহ আবু এবং বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসসহ প্রমুখ।
গত ৭ এপ্রিল গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ১০ জন সিনিয়র আইনজীবীর বৈঠক হয়। ওই বৈঠক শেষে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলে ১৪জন প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করা হয়।
সাধারণ আসনে সাতজন এবং সাতটি গ্রুপ আসনে সাতজনকে মনোনীত করে তাদের নাম ঘোষণা দেয়া হয়।
সাধারণ আসনে মনোনীতরা হলেন- বার কাউন্সিলের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ ইউসুফ হোসেন হুয়ায়ুন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার প্রধান প্রসিকিউটর ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ফিন্যান্স কিমিটির চেয়ারম্যান শ ম রেজাউল করিম, বার কাউন্সিলের বর্তমান কমিটির সদস্য জহিরুল ইসলাম (জেড আই) খান পান্না, অ্যাডভোকেট পরিমল চন্দ্র গুহ (পি সি গুহ) এবং মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বাদল।
অন্যদিকে গ্রুপ আসনে মনোনীতরা হলেন- সাবেক বৃহত্তর ঢাকা জেলার সব আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ -এ) বার কাউন্সিলের বর্তমান কমিটির নির্বাচিত সদস্য ও লিগ্যাল এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, বৃহত্তর ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ বি) মো. কবির উদ্দিন ভূঁইয়া, বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ সি) ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল, বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা ও সিলেট জেলা অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ ডি) এ এফ মো. রুহুল আনাম চৌধুরী, বৃহত্তর খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ- ই) পারভেজ আলম খান, বৃহত্তর রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ এফ) মো. ইয়াহিয়া এবং বৃহত্তর দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া ও পাবনা জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ এফ) রেজাউল করিম মন্টু।
আগামী ১৪ মে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে স্থাপিত ভোটকেন্দ্রে, দেশের জেলা সদরের সব দেওয়ানি আদালত প্রাঙ্গণে স্থাপিত ভোটকেন্দ্রে এবং বাজিতপুরসহ দেশের ১২ উপজেলা পর্যায়ে দেওয়ানি আদালত অঙ্গনে ভোটকেন্দ্রে এই ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
আইনজীবীদের সনদ প্রদান ও পেশাগত বিষয়ের সর্বোচ্চ সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল। প্রতি তিনবছর অন্তর অন্তর বার কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বার কাউন্সিল ১৫ জন সদস্যের সমন্বয়ে পরিচালিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে রাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পদাধিকার বলে এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। আর বাকি ১৪ জন আইনজীবী সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন।
১৪ জনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে একজন ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সারাদেশে সনদপ্রাপ্ত আইনজীবীদের ভোটে সাধারণ আসনে সাতজন এবং দেশের সাতটি অঞ্চলের লোকাল আইনজীবী সমিতির সদস্যদের মধ্য থেকে একজন করে সাতজন নির্বাচিত হবেন।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাধারণ নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৩ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ৮ এপ্রিল বিকেল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় ছিল। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল ১৮ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় ছিল ১৯ এপ্রিল বিকেল ৪টায়। ভোট হবে আগামী ১৪ মে।
Discussion about this post