নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বসিলার মেট্রো হাউজিংয়ে একটি বাড়িতে জঙ্গি আস্তানায় বিস্ফোরণে উড়ে গেছে টিনের চাল। ‘বিস্ফোরণে জঙ্গিদের ছিন্ন-ভিন্ন দেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সুইপিংকালে তা দেখতে পেয়েছে। কমপক্ষে একজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। তবে নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। বাড়িটির ভিতরেও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। র্যাব ধারণা করছে ভেতরে কেউ জীবিত নেই।’
এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির কেয়ারটেকারসহ তিনজনকে আটক করেছে র্যাব। তারা হলেন- কেয়ারটেকার সোহাগ, সোহাগের বউ মৌসুমী ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম ইউসুফ।
জঙ্গি আস্তানা পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকে র্যাবের এডিজি (অপারেশন) কর্নেল জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, ভেতরে অবিস্ফোরিত বোমা ও আইইডি (ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) দেখা গেছে। সেগুলো নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা চলছে। বিস্ফোরণে টিনসেড ভবনের টিনের চাল ও বেড়া উড়ে গেছে। টিনসেড ভবনটির পেছনে খাল। খালপাড়ে ঝোপজঙ্গল। সেখানেও উড়ে যাওয়া টিনের টুকরো, শরীরের অঙ্গ দেখা গেছে।
র্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার (এসপি) মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, বাড়ির মালিক আব্দুল ওহাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি এখন ঢাকার বাইরে। তিনি জানিয়েছেন, দেড়মাস আগে বাড়িটি ভাড়া নেয় দুইজন ভ্যান চালক। এ মাসে তাদের ছেড়ে দেয়ার কথা ছিল। তারা ভ্যান চালানোর আড়ালে জঙ্গি কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন কি-না তা খতিয়ে দেখা হবে।
টিনশেড বাড়িটির কেয়ারটেকারকে জিজ্ঞাসাবাদে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে ওই টিনশেড ভবনে কারা কারা থাকেন। কীভাবে ভাড়া দিয়েছেন। সোহাগ ওই এলাকায় ডিশের ব্যবসা করেন। এছাড়া টিনশেড বাড়িটির পাশে একটি মসজিদ রয়েছে। সম্প্রতি মসজিদটি সম্প্রসারণ করে মাদরাসা করার কথাও চলছিল। মসজিদের ইমাম ইউসুফকেও তাই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ওই টিনশেড বাড়ির বাসিন্দা জোনায়েদ বলেন, ওই টিনশেড বাড়িতে চারটি রুম। তিনি এক রুমে থাকেন। পেশায় রড-সিমেন্টের মিস্ত্রি, বাড়ি-ঘরের কাজ করেন।
তিনি বলেন, দুজন যুবক এক দেড় মাস হলো ভাড়ায় উঠেছেন। আজ ভোরে বিস্ফোরণের আগে আমাদের বের করে আনে র্যাব। ভোর ৫টায় যে বিস্ফোরণটি হয় তা ছিল খুব বড়।
আজ সোমবার ভোর ৫টার দিকে এ অভিযান শুরু হয়। তার আগেই আশপাশের বাড়ির বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বাড়িটির ভেতরে কয়জন অবস্থান করছে তা এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি র্যাব। বাড়িটিতে একাধিক জঙ্গি থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গণমাধ্যমকর্মীদের র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং এর প্রধান মুফতি মাহমুদ খান বলেন, রাত ৩টা থেকে পৌনে ৫টা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয়। হ্যান্ড মাইকেও কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছে। বাড়িটিতে একাধিক জঙ্গি থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভোর ৫টার দিকে বড় বিস্ফোরণ হয়েছে। এরপর আর কোনও আওয়াজ বা সাড়া-শব্দ পাওয়া যায়নি। আমরা আশপাশের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়েছি।
সকাল সোয়া ৮টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কমান্ডো টিম ও বোমা ডিস্পোজাল ইউনিট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বাড়িটিকে ঘিরে অভিযান চলছে।
Discussion about this post