নিজস্ব প্রতিবেদক: র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ জানিয়েছেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় জঙ্গি আস্তানায় র্যাবের অভিযানে অন্তত ২ থেকে ৩ জন নিহত হয়েছে। তিনি বলেন, জঙ্গিদের ঘটানো বিস্ফোরণে বাড়িটি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। জঙ্গিদের মরদেহগুলো ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে পড়ে আছে। তাই সব তথ্য ফরেনসিক নিরীক্ষার পর জানা যাবে। তবে ঘটনাস্থলে তিনটি পায়ের নমুনা মিলেছে বিধায় অন্তত দু’জনের মরদেহ আছে বলে আমরা ধারণা করছি।
আজ সোমবার বেলা ১১টার সময় ঘটনাস্থাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এতথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এখনও অভিযান চলছে, অভিযান শেষে বিস্তারিত জানানো হবে। বাড়িটির ভেতরে এখন সুইফট (বোম ডিসপোজাল ইউনিটের অভিযান চলছে। বোমা বিস্ফোরণে দুই থেকে তিন জন বডির বিভিন্ন অংশ পড়ে আছে।
এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির কেয়ারটেকারসহ তিনজনকে আটক করেছে র্যাব। তারা হলেন- কেয়ারটেকার সোহাগ, সোহাগের বউ মৌসুমী ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম ইউসুফ।
র্যাবের ডিজি বলেন, হলি আর্টিসানে হামলার পর থেকে আমরা প্রায় প্রতিনিয়তই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। এরই অংশ হিসেবে গত রাতে আমরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এখানে আসি। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে র্যাবের রুটিনে অভিযান অব্যাহত থাকবে। যেসব যুবক জঙ্গিবাদের দিকে ধাবিত হচ্ছে বা যাদেরকে জঙ্গিবাদে দীক্ষিত করা হচ্ছে তাদেরকে অনুরোধ করছি ফিরে আসতে। তাদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। জঙ্গিবাদ ইসলাম ও মুসলমানের পক্ষে না, এটি ইসলাম ও মুসলমানের বিরুদ্ধে। আমাদের ধর্ম এগুলো সমর্থন করে না। এ ধরনের প্রত্যেকটি ঘটনায় ইসলামকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
অভিযানের সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে র্যাব ডিজি বলেন, অপারেশন পূর্ণাঙ্গভাবে শেষ হয়নি। এখন বোম্ব সুইপিং ইউনিট কাজ করছে। এরপর কে নাইন ইউনিট (ডগ স্কোয়াড) আসবে। ওরা সুইপিং করার পর অভিযান আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হবে।
এর আগে জঙ্গি আস্তানা পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকে র্যাবের এডিজি (অপারেশন) কর্নেল জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, ভেতরে অবিস্ফোরিত বোমা ও আইইডি (ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) দেখা গেছে। সেগুলো নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা চলছে। বিস্ফোরণে টিনসেড ভবনের টিনের চাল ও বেড়া উড়ে গেছে। টিনসেড ভবনটির পেছনে খাল। খালপাড়ে ঝোপজঙ্গল। সেখানেও উড়ে যাওয়া টিনের টুকরো, শরীরের অঙ্গ দেখা গেছে।
র্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার (এসপি) মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, বাড়ির মালিক আব্দুল ওহাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি এখন ঢাকার বাইরে। তিনি জানিয়েছেন, দেড়মাস আগে বাড়িটি ভাড়া নেয় দুইজন ভ্যান চালক। এ মাসে তাদের ছেড়ে দেয়ার কথা ছিল। তারা ভ্যান চালানোর আড়ালে জঙ্গি কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন কি-না তা খতিয়ে দেখা হবে।
টিনশেড বাড়িটির কেয়ারটেকারকে জিজ্ঞাসাবাদে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে ওই টিনশেড ভবনে কারা কারা থাকেন। কীভাবে ভাড়া দিয়েছেন। সোহাগ ওই এলাকায় ডিশের ব্যবসা করেন। এছাড়া টিনশেড বাড়িটির পাশে একটি মসজিদ রয়েছে। সম্প্রতি মসজিদটি সম্প্রসারণ করে মাদরাসা করার কথাও চলছিল। মসজিদের ইমাম ইউসুফকেও তাই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
Discussion about this post