হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে অভিযান চালিয়ে র্যাব ও সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশন ১৩ রাউন্ড রকেট প্রোপেলড গ্রেনেড (আরপিজি) গোলা এবং কিছু বিস্ফোরক সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। উদ্ধারকৃত গোলা ও বিস্ফোরক দ্রব্যসমূহ বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ দল কর্তৃক ধ্বংস করা হচ্ছে। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরের দিকে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গতকাল শুক্রবার রাত ২টা থেকে শুরু হয়ে শনিবার বেলা ১২টায় এই অভিযান শেষ হয়।
র্যাব ৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মশিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
র্যাব ৭-এর অপারেশন কর্মকর্তা (অপস ও মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাশকুর রহমান বলেন, উদ্ধারকৃত বিস্ফোরকগুলো খুব নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এগুলো আমরা অকুস্থলেই ধ্বংস করে দিয়ে যেতে চাই। সেজন্য ঢাকা থেকে র্যাবের বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড ইতোমধ্যেই রওনা দিয়েছে। এছাড়াও বিস্ফোরক ধ্বংসের বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা করবে সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশন (সিলেট)-এর অধীনে ২১ ইঞ্জিনিয়ারিং কোর এর একটি বিশেষজ্ঞ দল।
এক বার্তায় র্যাব জানিয়েছে, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশন এবং র্যাবের একটি চৌকষ আভিযানিক দল হবিগঞ্জের সাতছড়ি রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে পরিত্যক্ত অবস্থায় ১৩ রাউন্ড আরপিজি গোলা এবং কিছু বিস্ফোরক সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
এর আগে ২০১৪ সালে সাতছড়িতে চার দফা অভিযানে ছয় বার অস্ত্র ও গোলাবারুদ পায় র্যাব। ১ জুন থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ দফায় ৩৩৪টি কামান বিধ্বংসী রকেট, ২৯৬টি রকেট চার্জার, একটি রকেট লঞ্চার, ১৬টি মেশিনগান, একটি বেটাগান, ৬টি এসএলআর, একটি অটো রাইফেল, পাঁচটি মেশিনগানের অতিরিক্ত খালি ব্যারেল, প্রায় ১৬ হাজার রাউন্ড বুলেটসহ বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধার করে র্যাব। ১৬ অক্টোবর থেকে ৪র্থ দফার ১ম পর্যায়ে উদ্যানের গহীনের অরণ্যে মাটি খুড়ে ৪র্থ দফায় ৩টি মেশিন গান, ৪টি ব্যারেল, ৮টি ম্যাগজিন, ২৫০ গুলির ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ৮টি বেল্ট ও উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি রেডিও উদ্ধার করা হয়। ওই বছরের ১৭ অক্টোবর দুপুরে এসএমজি ও এলএমজি’র ৮ হাজার ৩৬০ রাউন্ড, ত্রি নট ত্রি রাইফেলের ১৫২ রাউন্ড, পিস্তলের ৫১৭ রাউন্ড, মেশিনগানের ৪২৫ রাউন্ডসহ মোট ৯ হাজার ৪৫৪ রাউন্ড বুলেট উদ্ধার করা হয়। এছাড়া এসএমজি’র ২০টি, এলএমজি’র ৫টি, এসএলআর-এর ৬টি, ত্রি নট ত্রি’র ৪টি, এমএমজি ২টি, পিস্তলের ২৯টি ও জি থ্রি’র ১২টিসহ মোট ৮০টি ম্যাগজিন, ৫টি ওয়াকিটকি ও উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি রেডিও সেট উদ্ধার করা হয়। পরবর্তিতে ২০১৮ সালের ২ ফ্রেব্রুয়ারিতে আবার সেখানে অভিযান পরিচালনা করে ১০টি হাই এক্সক্লুসিভ ৪০ এমএম অ্যান্টি-ট্যাংক রকেট উদ্ধার করে র্যাব।
Discussion about this post